পড়বে আমায় মনে
কুয়াশার চাদরে ঢাকা
স্নিগ্ধ কোনো এক সকালে
অনেক কষ্টে গাছির
পেড়ে আনা খেজুরের রস
আর হুড়ুমের মিতালীতে ।
আমার ছায়া পাবে তুমি
শীতের প্রকম্পতায় টিকতে না পেরে
একটুখানি রোদ্দুরের খোঁজে বের হওয়া
চুরুটে বৃদ্ধার হাজারো নালিশ নিয়ে
নিষ্পলক আকশের দিকে তাকিয়ে থাকায় ।
আমি বারংবার ফিরে আসব
তোমার উদাস দুপুরের
ঘর্মাক্ত ঝগড়াঝাঁটির
ভাবলেশহীন নীরস ব্যস্ততায়।
আমার হাতছানি কাঁদাবে তোমায়
সেই যে যুদ্ধে যাওয়া সন্তানের মায়ের
শুকিয়ে যাওয়া অশ্রুধারার সহস্র দেনা
শোধরানোর নীরব তাড়নায় ।
,
ধরো যদি আবার আসি ফিরে
তোমার যাপিত বোবা তাড়নার
রুগ্ন চাহুনির অবুঝ ভাষাতে অথবা
মাঝ দরিয়ায় হারিয়ে যাওয়া
স্বামীকে ফিরে পাওয়া কৃষাণীর
বাঁধভাঙ্গা উল্লাসের
সুহাসিনী মুখরতা জুড়ে ।
আমায় খুঁজে পাবে তুমি
বিকেলের অনিন্দ্যসুন্দর সবুজ মাঠে
খেলায় মগ্ন যুবকের চোখের বাটে,
গোধূলির বিষণ্ণ বেলায় বিধ্বস্ত
প্রেমিকের অসহায় আত্মসমর্পণে।
তোমার অস্তিত্বের নাম না জানা সকল স্তরে
ঘন ঘন নিঃশ্বাসের পরশ বুলিয়ে দেবো
তোমার রক্ত-মাংস, শিরা-উপশিরা
সমগ্র সত্তাগত দায়বদ্ধতায়
নির্ঝঞ্ঝাট মিলিয়ে যাবো ।
রাত-দুপুরে
ঘুমের প্রচণ্ডতায় হারিয়ে যাওয়া
কোনো এক ষোড়শী কন্যার
স্বপ্নের আবির মাখানো রঙের মেলায়
বেমালুম, বেখেয়ালে পাবে তুমি আমায় ।
তুমি কী আনমনে ভড়কে যাবে
নচেৎ থমকে ?
চার বেহারার পালকি আর
কলেমার ধ্বনিতে !
সত্যিই কী ফিরে আসা সম্ভব ?
সত্যিই কী কারো চলে যাওয়া
জ্যোৎস্নার মৃদু-স্নিগ্ধ আলোয়
পুকুরপাড়ে বসা নবদম্পতির
নয়নাভিরাম ঢলাঢলিতে
এতটুকু প্রভাব ফেলতে পারে ?
হয়তবা কোনোদিনই না
আবার হয়তবা হাঁ !
ফিরেও আসতে পারে
ফিরে আসার
নিদারুণ ব্যাকুলতায় !
২৬ ৬ ২০০৬